রাজকীয় জানাজার মাধ্যমে বিদায় জানাবো: মাওলানা মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমির, হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামিম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ. আজ আমাদের ছে’ড়ে চলে গেছেন প্রভূর সান্নিধ্যে। আমি তাঁর রুহের মাগফেরাত ও উচ্চ মাকামের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।

ইন্তেকাল পরবর্তী কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হোক সে কামনা করি। তিনি দেশ-জাতি ও উম্মতের জন্য যে খেদমাত ও কাজ করে গেছেন সেটি উম্মতের জন্য অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিগত শতাব্দীকাল যাবত তাঁর যে খেদমাত বা তাঁর যে অবদান রয়েছে সেটি বাংলাদেশের জন্য অতুলনীয়। এ জাতী ও এদেশ তাঁর নিকট চির কৃতজ্ঞ থাকবে।

আজ আল্লামা আহমদ শফীর ইন্তেকালের পর নিজে’র ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এসে এসব কথা বলেন জামিয়া রাহমানিয়ার শায়খুল হাদিস মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, বিশেষ করে ২০১৩ সালে মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইজ্জত ও তাঁর মর্যাদা র’ক্ষার জন্য যে আহবান শায়খুল ইসলাম রহ. করেছিলেন সে আহবানে হেফাজতে ইসলামের যে মহাজাগরণ হয়েছিলো,

সারাদেশের মানুষ যে অভূতপূর্ব সারা দিয়েছিলো তাঁর আহবানে। সেটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল ও নজীর বিহীন অধ্যায় হয়ে থাকবে। যেভাবে ২০১৩ সালে ঐক্যব’দ্ধ হয়ে দেশজাতি তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছিলো। আম’রা তাঁর আনুগত্য করেছিলাম। তাঁর নেতৃত্বে বিশ্বব্যাপী এক জাগরণের নজীর কায়েম করেছিলাম।

এরপর মধ্যখানে কিছু অনভিপ্রেত প’রিস্থিতি তৈরি হলেও তাঁর ব্যাপারে কখনোই কোনো বিত’র্ক তৈরি হওয়ার বা বিত’র্ক করার কোনো সুযোগই ছিলো না।

তিনি ফেসবুক লাইভে আরও বলেন, তাঁর জীবদ্দশায় তাঁকে নিয়ে কেউ বিত’র্ক সৃষ্টি ক’রতে পারেনি। এজন্য আম’রা আশা করবো হজরতের ইন্তেকালের পরও যেনো বিত’র্ক না হয়। হজরতের মৃ’ত্যু পরবর্তী যেনো হজরতকে নিয়ে বিত’র্কের কোনো সুযোগ বা বিত’র্ক করার কোনো অপপ্রয়াস যেনো চালানো না হয়।

বরং আম’রা সকলে ঐক্যব’দ্ধভাবে শায়খুল ইসলাম রহ. এর জীবনের অন্তিম কার্যক্রমগুলো যদি পরিচালনা ক’রতে পারি সেটি যেমনিভাবে তাঁর মান মর্যাদা বৃ’দ্ধির উপলক্ষ হবে। তেমনি এর দ্বারা ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর অব’স্থানকে মজবুত করবে। এখন যদি কোনোভাবে হজরতকে নিয়ে বিত’র্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা চালানো হয় তাহলে সেটা অবশ্যই দুঃখজ’নক কাজ হবে।

আম’রা আশা করবো হজরতকে নিয়ে কোনো ধ’রনের অনভিপ্রেত পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা যেনো আম’রা না করি।তিনি ইন্তেকাল ক’রেছেন। তাঁর চিকিৎ’সায় যদি কোনো ধ’রনের ঘাটতি হয় কিংবা কোনো অবহেলা করা হয় তাহলে সেটা যথাযথ দায়িত্বশীল ক’র্তৃপক্ষ যাচাই করে তাঁর সঠিক তথ্য জাতির সামনে তুলে ধ’রবেন।

সুতরাং এ মু’হূর্তে আম’রা কেউ অনভিপ্রেত পরিবেশ সৃষ্টি না করি। আমি সারাদেশের তৌহিদী জনতা, বিশেষ করে তরুণ ছাত্র জনতার প্রতি আহবান করবো দলমত নির্বিশেষে, সকল মতপ্রার্থক্যের উর্দ্ধে উঠে শায়খুল ইসলাম রহ. কে এ জাতির সর্বশ্রেষ্ট অভিভাবক হিসেবে তাঁর রাজকীয় বিদা’য় সংবর্ধনা জা’নানোর।

ইসলাম যে জা’নাজার আয়োজনের নির্দে’শ দিয়েছে সে রাজকীয় জা’নাজার মাধ্যমে আম’রা শায়খুল ইসলাম রহ. কে, এ জাতীর এক শ্রেষ্ট সন্তানকে আম’রা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বশেষ সর্বো’চ্চ সম্মানটুকু দিতে কোনোরকমের কার্পূন্য করবো না। তিনি আরও বলেন, সর্বোপরি তাঁর ইন্তেকালে যে মহাশূন্যতার সৃষ্টি হলো, আল্লাহ যেনো কুদরতের মাধ্যমে সেটা পূর্ণ করেন।

শায়খুল ইসলাম তাঁর যে ইলমী উত্তরসূরী রেখে গেছেন, তাঁর যে সকল স্থলাভিষিক্ত রেখে গেছেন, তার যে সকল হাতেগড়া যে সকল কৃতিসন্তান রেখে গেছেন, তারা তাঁর অবর্তমানে এ জাতীর হাল ধ’রবেন। তাঁর শূন্যতা পূর্ণ করবেন। তাঁর নেতৃত্বের অবশিষ্ট দায়িত্ব তারা পা’লন ক’রতে চেষ্টা করবেন বলে আম’রা আশা রাখি।