স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে প্রবাসীর বাড়িতে তরুণীর অনশন

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পশ্চিম নাওডোবায় স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে কক্সবাজারের এক তরুণী অনশন করছেন। ২০ ডিসেম্বর (বুধবার) দুপুরে উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা ইউনিয়নের আবেদ আলী মুন্সি কান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর ফকিরের ছেলে সজিব ফকিরের (২৮) স্ত্রী দাবি করে অনশন করেন তিনি। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,

ভুক্তভোগী ওই তরুণী এবং জাজিরার সজিব ফকির দুজনেই সৌদি প্রবাসী ছিলেন।ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটকের মাধ্যমে সজিব ফকিরের সাথে প্রায় আড়াই বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তরুণীর। এক বছর দুই মাস আগে সৌদিতে থাকা অবস্থায় তারা এক হুজুরের মাধ্যমে বিয়ে করেন। এরপর দুজনে একসাথেই ছিলেন সৌদি আরবে। সৌদিতে থাকা অবস্থায় তাদের মাঝে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে মেয়েটি প্রেগন্যান্ট হলে বন্ধুর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ঔষুধ নিয়ে চার মাসের বাচ্চাকে নষ্ট করে ফেলে সজিব ফকির। একপর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেয় এভাবে আর থাকা যাবে না তাই আমেনা বেগম গত মাসে বাংলাদেশে এসে ঢাকায় কাজীর মাধ্যমে দুজনে কাবিন করেন।

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, দেশে আসার পর থেকেই সজিব ফকির আমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং আমাদের গোপন মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন সোশ্যাল প্লাটফর্মে ভাইরাল করে দেয়। আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়, এতদিন আমি তোমাকে শুধু ইউজ করেছি। আমাদের মাঝে সবই ছিল টাইম পাস। এখন আমি কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে সজিবের বাড়িতে চলে আসি। এই বাড়িতে আসার পরে সজিবের মা এবং বোনেরা আমাকে মারধর করে।

আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাঁচলে স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে এই বাড়িতে বাঁচব আর নয়তো বিষ পান করে আমি আত্মহত্যা করব। স্থানীয় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ঠান্ডু ফকির কালবেলাকে বলেন, সজিব ফকিরের সাথে তার প্রেম এবং বিয়ে নিয়ে সে যা কিছু বলেছে, তা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তাকে আমরা সজিব ফকিরের বউ হিসেবে গ্রহণ করে ঘরে তুলে নিব।

ইউপি সদস্য জুলফিকার আলী কালবেলাকে বলেন- কক্সবাজার থেকে স্ত্রীর দাবিতে আমাদের এলাকায় এক তরুণী এসেছে শুনে আমি ঘটনা স্থলে যাই। মেয়েটি এখানে আসার পর তার কোনো কথা না শুনেই সজিবের মা-বোন মিলে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করার পাশাপাশি বেশ কয়েকবার মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে মেয়েটি। পশ্চিম নাওডোবা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন ঢালী বলেন, আমি ঘটনাটি শুনে ইউপি সদস্যকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি এবং ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে আমরা আইনগত ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বিষয়টি নিয়ে জাজিরা পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ শরীফুল আলম কালবেলাকে বলেন, ওই ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। যদি মেয়েটি থানায় অভিযোগ করে তাহলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। আপাতত মেয়েটির সেফটি এবং আত্যহত্যা করবে এমন কথা বলায় আমরা সেটা আমলে নিয়ে আইনগতভাবে তাকে কোর্টে প্রেরণ করেছি। মাননীয় কোর্ট যেই আদেশ দিবেন আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *