যেটা আমি করি নাই, সেটা আমি মেনে নেব না: বাইকার ফারহানা

কেউ বলছেন প্রথা ভা’ঙার নজির, কেউ বা স’মালোচনায় মুখর। নিজে’র বিয়ের উৎসবে একটু অন্যরকম আনন্দ যোগ ক’রতে গিয়ে এভাবেই আলোচিত হয়েছেন যশোরের মেয়ে ফারহানা। মেয়েরা যখন বিমান ওড়াচ্ছে,তখন মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে বিত’র্কে কিছুটা আশাহত হলেও দমে যাননি তিনি।

প্র’স্তুতি নিচ্ছেন হয়রানির বি’রুদ্ধে মা’মলার। যশোরের মেয়ে ফারহানা আফরোজ। ১৩ আগস্ট মোটরসাইকেল চালিয়ে নিজে’র গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যেয়ে দেশজুড়ে আলোচনায় তিনি। ব্য’তিক্রমী এই আয়োজনের ছবি ও ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক ও ইউটিউবে ভাইরাল। অনেকে এই ঘ’টনাকে প্রথাভা’ঙার নজির হিসেবেও দেখছেন।

ফারহানা জা’নান, ২০১৭ সালে বিয়ের কাবিন হয় তার। পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বাকি ছিল। তাই তিন বছর পর দুই পরিবারের সম্মতিতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ভিন্নধ’র্মী কিছু ক’রতেই আয়োজন করেন মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার।ফারহানা বলেন, যাতায়াতের জন্য আমা’র আগে থেকেই বাইক চালানোর প্রয়োজন হয়।

ফেসবুকে নানাভাবে হ’য়রানির শি’কার হওয়ায় মা’মলারও প্র’স্তুতি নিচ্ছেন তিনি। ফারহানা বলেন, যেটা আমি করি নাই, সেটা আমি মেনে নেব না। এর জন্য আমি মানহা’নি ও আইসিটি মা’মলা করবো। আ’ইনজীবীরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শি’ষ্টাচার বর্হিভূত কার্যক্রমে দেশের প্রচলিত আ’ইনেই বিচার সম্ভব। দো’ষীদের শা’স্তির আওতায় না আনলে ভবিষ্যতে আরো বাড়তে পারে সাইবার অ’পরাধ।

সুপ্রীম কোর্টের আ’ইনজীবি ব্যারিস্টার মিতি বলেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কাউকে হ’য়রানি করলে তাকে শা’স্তির আওতায় আনা যাবে। এতে সর্বো’চ্চ ৩ বছরের জে’ল ও জ’রিমানা করা হয়। বাড়ি যশোরে হলেও ফারাহানা থাকতেন ঢাকায়। ক’রোনার কারণে ফি’রেছেন নিজ শহরে। ২০১৭ থেকে ঢাকায় মোটরসাইকেল চালান তিনি। ফারহানা আফরোজ জা’নান,

গায়ে হলুদের ছবি ভাইরাল হওয়া এবং নানা বিরূপ মন্তব্য তার জীবনে কোন প্র’ভাব পড়ছে না।তিনি বলেন, বাইক র‍্যালির ছবি ফেসবুকে আসার পর শ্বশুড়বাড়ির লোকজন তা স্বা’ভাবিকভাবেই নিয়েছেন। তারা আমা’র বাইক চালানোর বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন। ফলে তারা ছবি ও ভিডিও দেখে বেশ আনন্দ করেছে। আমা’র শ্বশুড় আমাকে খুব দ্রুত একটি বাইক কিনে দেবেন বলে জানিয়েছেন।

তবে তার স্বামী হাসনাইন রাফির স’ঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ফারহানা তাকে সংবাদমাধ্যমে না টানার জন্য অ’নুরো’ধ করেন। তার স্বামী বর্তমানে গাজীপুরে ক’র্মরত। ফারহানাও শিগগিরই ঢাকা যাবেন এবং শ্বশুরের প্রতিশ্রুত মোটরসাইকেলটি ঢাকা থেকেই কিনবেন। ফারহানা আফরোজ বলেন, সবাই নেচে-গেয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান উদযাপন করেছি।

আমি যেহেতু মোটরসাইকেল চালাতে পারি, তাই চালিয়ে অনুষ্ঠান করেছি। ব্য’তিক্রমী কিছু করার ভাবনা থেকেই এমন আয়োজন। এটি আমা’র নিজস্ব উদ্যো’গে করেছি। অনেক আনন্দ করেছি ব’ন্ধু-বান্ধব ও সাথীরা। যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে এসএসসি ও ২০১৩ সালে যশোর আব্দুর রাজ্জাক কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন ফারহানা।

এখন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) থেকে এইচআর-এ এমবিএ করছেন ফারহানা।তিনি আরও বলেন, ২০০৭ সাল থেকে বাইক চালাই। মূলত বাড়িতে সাইকেল ও প্রাইভেটকার চালানো শেখা হয় ছোট বেলাতেই। বাবার মোটরসাইকেলটিও চালানোর একটা ঝোঁ’ক ছিল। তাই বাবার অ’জান্তেই কোনো প্রশিক্ষক ছাড়াই মোটরসাইকেল চালানো শিখি।

২০১৩ সালে ঢাকায় আসার পর ব’ন্ধুদের মোটরসাইকেলে হাত পাকাই। এরপর নিজে স্কুটি কিনি। ওই স্কুটিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করি। ফারহানা আরও বলেন, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রার ছবি ফেসবুকে আসার পর শ্বশুড়বাড়ির লোকজন তা স্বা’ভাবিকভাবেই নিয়েছেন।

তারা আমা’র মোটরসাইকেল চালানোর বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন। ফলে তারা ছবি ও ভিডিও দেখে বেশ আনন্দ ক’রেছেন। কিন্তু নেটিজানরা বিষয়টিকে ভালোভাবে নিতে পারছেন না। তারা আমা’র চারিত্রিক সনদ দিচ্ছেন। এটা আমি মানতে পারছি না।

যে কারণে ছবি ভাইরাল হবার পর আমি নিজেই বাইক র‌্যালির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করি। তিনি আরও বলেন, সুযোগ পেলে আমি হেলিকপ্টার চালানোও শিখতাম। আমি সবকিছুই চালানো শিখতাম। স্বামীর পক্ষ থেকেও কোনো ধ’রনের আ’পত্তি নেই।