নিজেকে গাইনি চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসকের পোশাক পরে সন্দেহজনক ঘোরাঘুরি করছিলেন মুনিয়া খান রোজা (২৫) নামে একজন নারী। প্রতারক সেই নারীকে আটক করেছে আনসার সদস্যরা। শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালে নতুন ভবনের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে মধ্যরাতে তাকে শাহবাগ থানা হস্তান্তর করা হয়।
ঢামেক হাসপাতালের আনসার প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) উজ্জ্বল বেপারী এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার সময় নতুন ভবনের আইসিইউর দায়িত্বে ছিলেন আনসারের এপিসি জামান উদ্দিন। তিনি আমাকে বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে জানান সন্দেহজনক গতিবিধি হওয়ায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা ওই নারীকে আটক করেছি। তখন ডাক্তারদের ব্যবহারের অ্যাপ্রোন পরা ছিলেন। কোনোভাবেই তাকে দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে, তিনি ডাক্তার নন। ওই সময় আমাদের চিকিৎসকের মোবাইলও হারানো যায়। এতে আমাদের সন্দেহ হয়। পরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে আমাদের জরুরি বিভাগে নিরাপদে নিয়ে আসি। এক পর্যায়ে তিনি চিকিৎসক নন বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেন।
অভিযুক্ত মুনিয়া বলেন, আমি ভয়ে প্রথমে বলেছিলাম আমি ঢামেক গাইনি বিভাগের চিকিৎসক। কিন্তু আমার ভুল আমি বুঝতে পেরেছি। সত্যিকার অর্থে আমি কোনও চিকিৎসক না বা চিকিৎসা পেশার সঙ্গে আমি জড়িত না। আমি নীলক্ষেত থেকে ৫৫০ টাকা দিয়ে অ্যাপ্রোন কিনি এবং মিটফোর্ড এলাকা থেকে স্টেথোস্কোপ ক্রয় করি। নীলক্ষেত থেকে একটি আইডি কার্ডও বানিয়েছি। আমার ভুল হয়ে গেছে। এবারের মত আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি আর জীবনে এ কাজ করবো না।
অভিযুক্ত মুনিয়া আরও বলেন, তিনি মূলত এখান থেকে রোগীদের বেসরকারি হাসপাতালে ভাগিয়ে নিয়ে যান। এ ছাড়া ডাক্তারদের অ্যাপ্রোন পরে তাদের অগোচরে রুমে ঢুকে মূল্যবান মোবাইলসহ অন্যান্য সামগ্রী চুরি করেন। চাঁদপুর সদরের হামান কর্দ্দি গ্রামের প্রয়াত মো. করিম খানের মেয়ে মুনিয়া। বর্তমানে তিনি পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে ভাড়া বাসায় থাকেন। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, অভিযুক্ত ভুয়া নারী চিকিৎসককে আনসার সদস্যরা আমাদের পুলিশ ক্যাম্পে দিয়ে যায়। পরে আমরা ওই নারীকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।