করো’না ভা’ইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ যখন চোখ রাঙাচ্ছে, তখন বিশ্বখ্যাত ও’ষু’ধ কোম্পানি ফাইজার ও জার্মানভিত্তিক বায়োএনটেক কোম্পানিই প্রথম সুখবরটি দিল। অদৃ’শ্য শত্রুর বি’রুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষ যে অ’স্ত্রটি হাতে,
পেতে এত দিন উচাটন হয়ে ছিল, তা-ই ধ’রা দিল। ভ্যাকসিন। কো’ভিড-১৯ ভ্যাকসিন। ফাইজার যে ভ্যাকসিনটির ঘো’ষণা দেয়, তা করো’না ভা’ইরাসের বি’রুদ্ধে লড়াইয়ে ৯০ শতাংশ কা’র্যকর। এর পরপর আরেকটি ভ্যাকসিনের ঘো’ষণা দেয় মডার্না। কিন্তু প্রথম তো প্রথমই। আর এ প্রথম ভ্যাকসিনটি ধ’রা দিল এক নিবেদিত মুসলিম দম্পতির হাত ধ’রে।
করো’না ভা’ইরাসের হানায় গোটা বিশ্ব থমকে যেতে বাধ্য হয়েছিল। তারপর প্রকোপ কিছুটা কমে এলে ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশ আবার সচল হতে শুরু ক’রে। কিন্তু সেই স্বস্তির সময় পুরোপুরি আসার আগেই শুরু হয়ে গেল করো’না র দ্বিতীয় ঢেউয়ের চোখরাঙানি। বাড়তে থাকল সং’ক্রম’ণ ও মৃ’ত্যুর সংখ্যা।
আর দ্বিতীয় এই আঘা’ত থেকে বাঁচতে মানুষকেও আবার ঘরবন্দী হওয়ার বাস্তবতা মেনে নিতে হচ্ছে। এই সময়ে এমন একটি সুখবরের মূল্য অনেক। ভ্যাকসিনটির ঘো’ষণা দেওয়ার সময় বায়োএনটেকের প্রধান নির্বাহী ক’র্মকর্তা (সিইও) উগার শাহিন বলেন, কো’ভিড-১৯ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ফলে থমকে যাওয়া পৃথিবী আবার সচল হবে, স্বা’ভাবিক জীবনযাত্রা ফি’রে আসবে।
কো’ভিড-১৯ ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পুরো দা’য়িত্বে ছিলেন বায়োএনটেক কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা তুরস্ক বংশোদ্ভূত জার্মান দম্পতি উগার শাহিন ও ওজলেম তুরেসি। এই মুসলিম দম্পতির মাত্র কয়েক বছর আগে প্রতিষ্ঠিত বায়োএনটেক কোম্পানিটি ইউরোপে খুব একটা পরিচিত না হলেও করো’না ভা’ইরাসের ভ্যাকসিন,
আবিষ্কার ক’রে বিশ্বখ্যাত হয়ে উঠেছে। ড. উগার শাহিন ও ওজলেম তুরেসি মূলত ক্যানসার সেল নিয়ে গবেষণার জন্য বায়োএনটেক প্রতিষ্ঠা ক’রেছিলেন। তার সাফল্যে সারথি স্ত্রী উজলেম তুরেসি। ২০০১ সালে জার্মানিতে দু’জনে গড়ে তোলেন গ্যানিমেড ফার্মাসিউটিক্যালস। এর পর ২০০৮ সালে ক্যা’ন্সার চিকিৎ’সার,
জন্য বায়োএনটেক প্রতিষ্ঠা ক’রেন তারা। ইউরোপের বাইরে প্রতিষ্ঠানটির তেমন পরিচিতি না থাকলেও ভ্যাকসিন আবিস্কারের খবরে রাতারাতি বিশ্বখ্যাত মুসলিম এই দম্পতি। শাহিন-তুরেসি দুই জনই তুর্কি বংশোদ্ভূত। ছোট বেলায় আভিবাসী হিসেবে ইস্কেন্দেরুন থেকে পরিবারের সাথে জার্মানিতে পাড়ি জামান ৫৫ বছর বয়সী উগার শাহিন।
আর ৫৩ বছর বয়সী স্ত্রী উজলেম তুরেসির জ’ন্ম জার্মানিতেই। ১৯৯৩ সালে পিএইচডি গবেষণার সুবাদে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসাপাতালে দুজনের পরিচয়। তারপর ২০০২ সালে বিয়ে। এই বিজ্ঞানী দম্পতি এতোটাই কাজ পাগল যে বিয়ের দিনও আনুষ্ঠানিকতা সেরে হাজির হয়েছেন ল্যাবে। তাদের দিনরাত গবেষণার সবচে বড় সাফল্য করো’না র ভ্যাকসিন।
তবে করো’না ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী বায়োএনটেকের প্রতিষ্ঠাতা উগার শাহিনের ব্য’ক্তিগত জীবন খুবই সাদামাটা। ব্যবহার ক’রেন না কোন গাড়ি, থাকেন সাধারণ ফ্লাটে। ছুটতে পছন্দ শুধু কাজে’র পেছনে। বায়োএনটেক’র প্রধান নির্বাহী ক’র্মকর্তা উগার শাহিন বলেন, এটি স’ম্পূর্ণ নতুন একটি ভা’ইরাস।
তাই অনেকটা অন্ধের মতোই ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করি। প্রথম দিকে খুবই চ্যালেঞ্জে’র ছিলো। ১০ মাসের মধ্যে সাফল্য ধ’রা দিয়েছে। যা আশানুরুপ খুব দ্রুত হয়েছে। করো’না বড় পরিসরে ছড়ানোর আগে জানুয়ারিতেই ভ্যাকসিনের গবেষণা শুরু ক’রে প্রতিষ্ঠানটি। বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন যৌথভাবে উৎপাদনের জন্য চুক্তি ক’রেছে বিশ্ববিখ্যাত ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার। প্রতিষেধকটি মানব শ’রীরে ৯০ ভাগ কা’র্যকর বলে দা’বি ক’রা হয়েছে।